চট্টগ্রাম নগরীর অলিগলিতে নামে বেনামে গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন স্কুল-কিন্ডারগার্ডেন ।ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান নিয়ে আছে জনমনে নানা প্রশ্ন। বিশেষ করে নগরীর জামালখান,চকবাজার,
দেওয়ানবাজার,বহদ্দারহাট সহ একাধিক স্থানে অনুমোদনহীন এসব স্কুল গড়ে উঠছে।
সরেজমিনে জানা যায়, প্লে-গ্রুপ থেকে প্রাথমিক পর্যন্ত পাঠদান করা হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে আবার চলছে এসএসসি অবধি পাঠদান। আবদ্ধ জায়গায় গড়ে ওঠা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ। পাঠদান কতটুকু মানসম্মত হচ্ছে তাও একটি চিন্তার বিষয়।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহরের অলিগলি, পাড়া-মহল্লায়, প্রধান সড়কের ওপর বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধিকাংশেরই নেই কোনো অনুমোদন। শিক্ষার পরিবেশ, ভালো মানের শিক্ষক ছাড়াই চলছে এসব প্রতিষ্ঠান। এলাকার গৃহীনীরা নামমাত্র বেতনে তারা সেখানে শিক্ষকতা করেন। এর বাইরে শিক্ষার্থীদের কোচিং করিয়ে বাড়তি আয় করেন। কোচিং সেন্টার গুলোর স্যাররাও এসব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেন অথচ তারাও স্বীকৃত সার্টিফিকেট ধারী নন।
দেখা যায়, অনুমোদনহীন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অন্ধকার রুমে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। দিনেও সূর্যের আলো পৌঁছায় না এসব শ্রেণিকক্ষে। এই অভাব ঢাকতে তারা আবার “সম্পুর্ন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত” ক্লাসের কথা বলে ছাত্রদের ডেকে আনছেন। তার ওপর স্কুল কর্তৃপক্ষ বাড়তি আয় করতে শিক্ষার্থীদের নিম্নমানের প্রকাশনীর মানহীন বই কিনতে বাধ্য করে। এসব পাঠ্যবইয়ের কোনো গুরুত্ব না থাকলেও জোর করে সেগুলো পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বলে দেয়া হয় কোন টেইলার্স থেকে স্কুল ইউনিফর্ম সেলাই করতে হবে। শিক্ষার্থীরাও না বুঝে সেখান থেকেই সেলাই করেন।
অনুমোদনহীন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চললেও মনিটরিং এর আওতায় আসেনি এসব প্রতিষ্ঠান । তবে নিজেদের অনুমোদন না থাকায় এসব স্কুল-কলেজগুলো অন্য কোনো অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করিয়ে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেয়। ফলে বড় ব্যানারে তারাও লিখে দিতে পারে,, এই বলে যে “এ বছর শতভাগ পাস”। এরকম চটকদার বিজ্ঞাপনে প্রতারিতও হচ্ছেন অনেক শিক্ষার্থী।
ফ্ল্যাটবাড়িতে এসব প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নিজস্ব কোনো দালান কোনো স্থাপনা না থাকায় তারা পাচ্ছেন না অনুমোদন। আবেদন করলেও থাকতে হচ্ছে অননুমোদিত প্রতিষ্ঠান হিসাবেই।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জনাব শহীদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান ” তারা অনুমোদনহীন হলেও একটা নির্দিষ্ট নাম্বারের মাধ্যমে তারা আমাদের থেকে বই সংগ্রহ করতে পারেন। আমরা এতটুকুই মনিটরিং করতে পারি, তবে সম্ভবত এ বছর থেকে আমরা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবো ”
উল্লেখ্য,প্রাথমিক শিক্ষাবোর্ডের তথ্য মতে প্রাথমিকে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৯ লক্ষ ৩২ হাজার ৬৩৮ জন।