আজ জাতীয় শোক দিবস।সমগ্র বাঙালির জন্য আজ বেদনার দিন।ঘাতকদের হাতে জাতির পিতা ও তার পরিবার সদস্যদের হারিয়ে শোকের সাগরে মূহ্যমান বাঙালির আজ আত্মদংশন ও অনুশোচনার দিন। এই দিনটিকে আজ জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করবে পুরো দেশ।দেশপ্রেমিক জনতার অন্তরে গেয়ে উঠবে ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই.. । আর এটি শুধু গান নয়।এটি যেন বাঙালি জাতির অনন্তকালের আক্ষেপ।জাতির জনককে অকালে হারানোর কষ্ট বুকে বয়ে বেড়ানো মানুষদের নিত্য বেদনার পদাবলী এটি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর কখনও আসবেন না ফিরে, তবে ফিরে ফিরে আসে আজ ১৫ই আগস্ট।৪৭ বছর আগের এই দিনে ঘাতকরা স্বপরিবারে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুকে।আজ যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানা কর্মসূচি মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু ছাড়াও ১৫ আগস্ট রাতে ধানমন্ডির বাড়িতে তার সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব,ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল,বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মনির বাসায় হামলা চালিয়ে তাকে, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা করে তাকে ও তার মেয়ে বেবী, ছেলে আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় রেন্টু খানকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং নিকটাত্মীয়সহ ২৬ জনকে ওই রাতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ওই সময় জার্মানিতে অবস্থান করায় তারা প্রাণে বেঁচে যান।
জাতীয় শোক দিবসে সরকারি ছুটি থাকবে। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনগুলোয় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোয়ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। এছাড়া দেশের সব সরকারি হাসপাতালে দিবসটি উপলক্ষে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এছাড়া পোস্টার,সচিত্র বাংলাদেশের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ ও বিতরণ এবং বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে।