শুক্রবার , ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বর্তমান যুবসমাজ, সামাজিক অবক্ষয় ও ভবিষ্যৎ ভাবনা

আবদুল্লাহ :

একটি দেশের যুবসমাজ যে কোন পর্যায়েই সে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এবং তার প্রধান জীবনীশক্তি স্বরুপ । তবে বর্তমান প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন ও গতিশীল বৈশ্বিক অর্থনীতির এ যুগে চোখ বন্ধ করে একথা বলার আর সুযোগ নেই এবং এই বিষয়টিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে যুবসমাজের ক্রমবর্ধমান অপরাধ প্রবণতা, অসহিষ্ণুতা ও মানবিক অবক্ষয়। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে বলার অপেক্ষা রাখেনা যে দায়িত্বশীল, সুশৃঙ্খল, ও সুপরিচালিত যুবসমাজই একটি দেশের সত্যিকারের সম্পদ স্বরুপ ও পরিবর্তনের কাণ্ডারী। বাংলাদেশে জাতীয় যুবনীতি অনুসারে ১৮-৩৫ বছর বয়সের মধ্যকার জনগোষ্ঠীকে যুব হিসেবে অভিহিত করা হয় এবং সে হিসেবে মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এ যুবসমাজ যা সংখ্যায় প্রায় ৫ কোটির উপরে (যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বরাতে)।

যুবকদের চরিত্র ধ্বংস করার জন্য যেসব হাতিয়ার দরকার সবই আমাদের বাংলাদেশে চলমান আছে।
প্রথমতঃ হচ্ছে মাদকদ্রআ গুলো যেমন – ইয়াবা, ফেনসিডিল, হিরোইন।

দ্বিতীয়তঃ পর্নোগ্রাফি , বর্তমান জগতে মোবাইল হচ্ছে পর্নোগ্রাফির কারখানা। বর্তমানে ইন্ডিয়ান ফ্লিম এর মধ্যে বিভিন্ন পর্নোগ্রাফির ক্লিপগুলো সংযুক্ত থাকে।

তৃতীয়তঃ অপরাজনীতি , ছাত্র রাজনীতি মানেই বোমাবাজি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, কথায় কথায় দলবদ্ধ হয়ে গাড়ি ভাংচুর করা। আর এই ভাংচুরের দায়িত্বে থাকে গরীব নিরীহ সাধারন ছাত্ররা। সাধারন ছাত্ররা রাজনীতিতে জড়ালেও বিপদ, না জড়ালেও বিপদ। বর্তমান ছাএ রাজনীতি হলো এরকম।

আজকের যুবসমাজের সামাজিক অবক্ষয়ের প্রধান কারণঃ

ক্রমবর্ধমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসম প্রতিযোগিতা ও মানসিক চাপ।
বিকল্পধারার কর্মসংস্থানের অভাব, সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ ও খেলাধুলার সুযোগের অভাব।
গতানুগতিক শিক্ষা কার্যক্রম এবং বাস্তবধর্মী নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিক্ষার অভাব।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি, অপব্যবহার ও উদ্দেশ্যহীন ব্যবহার।
নোংরা রাজনৈতিক কার্যকলাপে সম্পৃক্ততা ও ক্ষমতা প্রদর্শনের মোহ।

যুবসমাজের উন্নয়নে যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়নে সরকার সহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। একটি উন্নত যুবসমাজ গঠনে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল সামাজিক প্রতিষ্ঠানের যার যার অবস্থান থেকে সচল দ্বায়িত্ব পালন অপরিহার্য। আমাদের যুব সমাজকে রক্ষা করা আমাদের দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য, তাই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনকে এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার, উন্নয়নসহায়ক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পারিবারিক পর্যায়ে একাত্ত্বতার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।