আব্দুল্লাহ:
আদর্শ শব্দের অর্থ যা অনুসরণ করার যোগ্য । এটাকে ইংরেজিতে মডেল বলে।আদর্শ সমাজ বলতেও তাই এমন একটা সমাজকে বুঝায় যা দেখে দুনিয়ার মানুষ অনুপ্রাণিত হতে পারে এবং উক্ত সমাজের অনুকরণ বা অনুসরণ করতে পারে। আদর্শ সমাজ একটা আদর্শ জীবনাদর্শের কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে। আর ইসলাম ছাড়া সেই জীবনাদর্শ কিছুই হতে পারে না। ইসলামই পেরেছে সমাজব্যবস্থাকে সুখী-সুন্দর করতে। শান্তি কল্যাণ এবং ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ আল্লাহর বিধান ছাড়া কখনো প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না । আমরা আদর্শ বাস্তবায়ন করবো তারই যিনি জীবনে একটা মিথ্যা কথা বলে নাই। আদর্শ বাস্তবায়ন করবো তার যিনি কখনো কাউকে কারণ ছাড়া প্রহার করে নাই । কু কথা বলে নাই। আমানতের খেয়ানত করে নেয়। তিনি হচ্ছেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম । তার আদর্শ বাস্তবায়ন করব । তিনি তার মানবীয় গুণাবলী দ্বারা মানুষকে আকৃষ্ট করেছেন।আদর্শ বাস্তবায়ন করবে তারাই। কোন মুজিবের আদর্শ বাস্তবায়ন হবে না। আমাদের মহান নেতা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম প্রতিষ্ঠিত ইসলামের সমাজব্যবস্থায় একমাত্র আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা নামে অভিহিত হতে পারে। উক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিস্ঠার জন্য সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালানো তরুণদের কাজ।
বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মাদ (সা.) বিশ্বমানবতার কল্যাণে তরুণদের নিয়েই পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম সংগঠন ‘হিলফুল ফুযুল যুব সংঘ’ গঠন করেছিলেন। হজরত মোহাম্মাদ (সা.) যখন দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে মাঠে নেমেছেন সর্বাগ্রে তরুণরাই এগিয়ে এসেছেন। হজরত আবু বকর (রা.), হজরত উমর (রা.) তরুণ বয়সে ইসলাম কবুল করেন। আসহাবে কাহাফে যারা ছিলেন তারাও ছিলেন তরুণ। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, হে নবী! আপনার কাছে আমি তাদের আসহাফে কাহাফ’র ইতিবৃত্তান্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করেছি, তাঁরা ছিল কয়েকজন তরুণ। তাঁরা তাদের পালনকর্তার প্রতি ঈমান আনয়ন করেছিল এবং আমি তাদেরকে সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করে দিয়েছি। (সূরা কাহাফ : ১৩)।
ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হজরত বেলাল (রা.) ছিলেন তরুণ। হজরত ইবরাহিম (আ.) যখন মূর্তি পূজার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পাষন্ড নমরুদের তৈরিকৃত আগুনে নিক্ষিপ্তি হয়ে ছিলেন তিনি ছিলেন তরুণ। হজরত ইউসুফ (আ.) যখন কারাগারে ছিলেন তখন তিনি তরুণ ছিলেন। হজরত ইউনুস-কে (আ.) যখন সমুদ্রের মাছ গিলে ফেলে তখন তিনি ছিলেন তরুণ।
খেলার মধ্যে যারা রেকর্ড করেছেন, ওয়াসিম আকরাম, ইমরান খান, আফ্রীদি, শোয়েব আক্তার, আজহার, ধনী, প্লে, সালাহ, জিদান, এরা সবাই ছিলেন তরুণ।
“যখন চক্ষু ঘুমিয়ে পড়ে তখন আমরা যুবকরা ভোরে জাগা পাখির ন্যায় প্রত্যুষে জাগ্রত হয়ে ফজরকে অভ্যর্থনা জানাই। আমরা যুবকরা সবাই মিলে প্রকৃত মর্যাদা অর্জনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। (জেনে রাখ) যে বিজয়ের জন্য সকাল সকাল ঝাঁপিয়ে পড়ে, সেই বিজয় ছিনিয়ে আনে।”
এখনও তরুণরাই ইসলাম, নবী, দেশ ও জাতির মুক্তির জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছেন। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের তরুণদের পদচারণায় আজও মুখরিত। বিশ্বজুড়ে চলছে আজ তরুণদের জয়-জয়কার। জাতির প্রাণের স্পন্দন তরুণ সমাজ। তরুণরা যে উদ্দেশ্যেই জেগেছে সে উদ্দেশ্যই অর্জন করেছে। এমনিভাবে ইতিহাসের পাতায় পাতায় লেখা রয়েছে তরুণদের আত্মত্যাগর কথা। একটি আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে তরুণদেরই জেগে উঠতে হবে, জাগাতে হবে জাতিকে। মায়ের আঁচলে লুকিয়ে নয়, বোনের স্নেহের ডোরে বাঁধা পড়ে নয়, বাবার শক্ত চাহনিতে ঘরের আড়ালে লুকিয়ে নয়। ইসলাম-মানবতা এবং জাতির কল্যাণে তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম।