বৃহস্পতিবার , ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঘূর্ণিঝড়ের সময় দোয়া ও আমল

নিজস্ব প্রতিবেদক:-

দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানার উপক্রম ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা যায়, উপকূলীয় ১৩টি জেলার মধ্যে মূল আঘাত হানবে বরগুনা সদর, পাথরঘাটা এবং পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জেলায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি মহান রবের রহমতের নিদর্শন হলেও কখনো তা আজাবের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

হাদিস থেকে জানা যায়, প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া বইলে রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে মশগুল হতেন। সাহাবাদের জীবনেও দেখা যায়, তারা বিপদে-মুসিবতে নামাজে দাঁড়াতেন ও ধৈর্য ধারণ করতেন। আল্লাহ তায়ালা মূলত কিছু কিছু বালা-মুসিবত দিয়ে মানুষকে সতর্ক করেন।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান, মাল ও ফলফলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, নিজেদের বিপদ-মুসিবতের সময় বলে, “নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী”, তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফেরাত ও রহমত এবং তারাই হেদায়াতপ্রাপ্ত।’ (সুরা বাকারা : ১৫৫-১৫৭)

এমন ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ নানান দুর্যোগে আশ্রয় ও যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়ার পরও মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করা নবীজির সুন্নত।

আয়েশা (রা.) বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝড়ো বাতাস বইত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তেন- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এই ঝড়ের কল্যাণ, এর মধ্যস্থিত কল্যাণ, এর সঙ্গে প্রেরিত কল্যাণ। আমি আপনার নিকট পানাহ চাই এই ঝড়ের অনিষ্ট থেকে, এর মধ্যস্থিত অনিষ্ট থেকে, এর সঙ্গে প্রেরিত অনিষ্ট থেকে। (বুখারি ও মুসলিম)।’
বুখারির আরেক বর্ণনায় ঝড় তুফানে ছোট একটি দোয়ার উল্লেখ আছে, তা হলো- ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের থেকে ফিরিয়ে নাও, আমাদের ওপর দিয়ো না।’

তাছাড়া বৃষ্টিপাত বেশি হলে মহানবী (সা.) পড়তেন- ‘আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা, ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ! পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোতে বৃষ্টি দিন।’ এরপর যখন বৃষ্টি হতো, তখন মহানবী (স.) শান্ত হতেন।’ (বুখারি: ১০১৪)।