বৃহস্পতিবার , ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রিজার্ভ কমে আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে

চট্টলা সংবাদ প্রতিবেদন:

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে এসেছে। গত বুধবার দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৯৬ কোটি ডলার। এরপর আজ ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করা হয় ৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ফলে দিন শেষে রিজার্ভ আরও কমে গেছে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) মার্চ-এপ্রিল সময়ের আমদানি বিল বাবদ ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ৩০ বিলিয়নের নিচে নেমেছিল। এরপর বিশ্বব্যাংকের ঋণের টাকা আসায় তা খানিকটা বাড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছর ধরেই রিজার্ভ কমার ধারায় রয়েছে। ২০২০ সালে কোভিড মহামারি শুরু হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত বাড়তে থাকে। বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় ওই সময় সব প্রবাসী আয় বৈধ পথে তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আসে। আবার আমদানিও কমে যায়। ফলে রিজার্ভ বেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ে। ফলে বাড়ে দেশের আমদানি খরচও। তবে সেই তুলনায় বাড়েনি প্রবাসী ও রপ্তানি আয়। এই কারণে আমদানি দায় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে এক দিকে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন করতে হচ্ছে অন্যদিকে রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। তারপর থেকেই দেশের রিজার্ভ কমতে থাকে।

২০২২ সালের ২৪ মে শেষে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ২২৯ কোটি ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে এক হাজার ২৩৬ কোটি ডলার। অবশ্য এর বড় অংশই রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করার কারণে। মূলত সরকারি কেনাকাটা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের আমদানি দায় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে আমদানি কম থাকার পাশাপাশি উচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে ২০২১ অর্থবছরে দেশের ব্যাংকগুলো থেকে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলার-সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপগুলো কাজ না করায় সংকট বরং আরও গভীর হয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি একক দাম নির্ধারণের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ না করলে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, রিজার্ভ বাড়ানো সম্ভব হবে না।

আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে প্রকৃত রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলারে উন্নীত করতে হবে। সেইসঙ্গে আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৮০ ডলারের নিচে থাকতে পারবে না।