বুধবার , ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কর্ণফুলীতে এক বৈঠকেই সমাধান, সন্তুষ্ট দু’পক্ষই

চট্টলা সংবাদ প্রতিবেদন:

এবার থানায় নিষ্পত্তি হলো পারিবারিক সমস্যার। গতকাল চট্টগ্রামের কর্নফুলী থানার বড়উঠান গ্রামের সোহেল মিয়া তার কন্যা ও জামাইয়ের পরিবারে চলা বিরোধ নিষ্পত্তিতে দ্বারস্থ হন পুলিশের।

জানা যায়, দেড় বছর আগে উপজেলার বড়উঠান গ্রামের রফিক আহমেদের পুত্র মোজাম্মেলের সাথে ছয় লাখ টাকা দেনমোহরে কাজি অফিসে মেয়ের বিবাহ হয়। কিছুদিন পরে মেয়ের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা করে বরের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও একসময় বর এবং বরের পরিবারের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে জটিলতা বাড়তে থাকে সোহেলের। ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে নানারকম দাবিদাওয়া ও চাহিদার কথা আসতে থাকে। সমস্যা বাড়তে থাকলে আইনী ভাবে বিয়ের ১১ মাস পরে চলতি বছরের শুরুর দিকে আদালতে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

সোহেল বলেন, বিচ্ছেদের পরে মেয়ের প্রাক্তন জামাই নানারকম হয়রানি করতে থাকে। সে মেয়ের নামে কুৎসা রটনা করে । এমনকি আমাদের কাছে ৪ লাখ টাকা পাওনা দাবি করে । এতো টাকা সে বিয়ের পর বিভিন্ন সময় দিয়েছে বলে । সমস্যায় পড়ে স্থানীয়ভাবেও কয়েকবার বসলেও মোজাম্মেল এবং তার পরিবার হয়রানি চালিয়ে যেতে থাকে আমাদের। একপর্যায়ে পাশ্ববর্তী জুলধা পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে অভিযোগ করলে দায়িত্বরত অফিসার আমাদের এবং ছেলেকে ও তার পরিবারকে থানায় আসতে বললে আমরা থানায় আসি।

রাত নয়টার সময় কর্ণফুলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান তাদের বক্তব্য শোনেন। পরবর্তীতে সোহেল মিয়ার মেয়ের সাবেক স্বামী মোজাম্মেলের মুচলেকা সহকারে ঘটনার মিমাংসা করেন। এছাড়াও সবধরনের হয়রানি বন্ধ করতে তাকে সতর্কও করা হয়। এসময় মোজাম্মেল ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়া সহজে দীর্ঘ দিনের হয়রানীর সমাধান পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন সোহেল মিয়া ও তার স্ত্রী। কর্ণফুলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসানের কক্ষ থেকে বের হয়ে এসে প্রতিবেদককে সোহেল মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মেয়ের সাবেক স্বামীর অত্যাচারে মানসিক অশান্তিতে ছিলাম। আমার মেয়েও অনেক কষ্ট পেত। ছেলে ও তার পরিবার বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করত। তবে থানায় এসে সাহায্য কামনা করলে ওসি স্যার সুষ্ঠ একটা সমাধান করে দিয়েছেন। এখন আমরা শান্তি থাকতে পারব।

শনিবার রাতে একই সময়ে থানায় এসেছিলেন উপজেলার চরলক্ষ্যা এলাকার বাসিন্দা রহমত আলী। প্রতিবেশীর সাথে চলমানভূমি বিরোধে তিনি হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। থানায় এসে অফিসারকে সমস্ত বিষয় জানালে থানা থেকে অভিযুক্তের সাথে যোগাযোগ করে তাকে থানায় আসতে বলা হয়। মাত্র ৩৫ মিনিটে দু’পক্ষকে একটি সমাধানের পথ দেখিয়ে দেন থানার কর্তারা।

সোহেল মিয়া বা রহমত আলীর মতো পারিবারিক ঝামেলা সহ নানারকম সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন হাজির হন একাধিক মানুষ। মামলা মোকদ্দমা ছাড়াও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঠিক দিকনির্দেশনায় সহজ পথে সমাধানও হচ্ছে এসব সমস্যা। জটিলতায় না গিয়ে সহজ দুপক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান পেয়ে সেবাপ্রত্যাশী সন্তুষ্ট হচ্ছেন।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ বলেন, আমরা সহজ ও দ্রুতগতির আইনী সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। বড় কোন আইনী ঝামেলা না হলে দুপক্ষের সাথে আলোচনা করে এক বৈঠকে সমাধান দেই।

 

চট্টলা সংবাদ/১২ই জুন / আজাখা