চট্টলা সংবাদ প্রতিবেদন :
বিগত ১৫ ই সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসের সমসাময়িক বিষয় ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার্থে করণীয় এবং শহীদ ওয়াসিমের নামে কলেজের ভবন নামকরণের প্রস্তাব নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের প্রিন্সিপাল মোজাহিদুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।
এইদিকে ছাত্রদলের সদস্যদের দলীয় পরিচয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন চট্টগ্রাম কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের দলীয় কার্যকলাপের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিবৃতিও প্রদান করেন যা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
চট্টগ্রাম কলেজে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে একটি নিরপেক্ষ, নিরাপদ ও রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের জন্য সংগ্রাম করে আসছে। এ ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের লক্ষ্যে গৃহীত নীতির অধীনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থেকেছে। কিন্তু গতকাল ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের সদস্যদের দলীয় পরিচয়ে প্রবেশ এবং দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি আঘাত। এ ধরনের কার্যকলাপ সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে জুলাই বিপ্লবের শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী এবং তাদের মেধা, মনন এবং শিক্ষার পরিবেশ যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ছাত্রদলের গতকালকের কার্যক্রম এই প্রতিষ্ঠিত নীতির পরিপন্থী এবং এর ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্পাসের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।
আমরা আশা করি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং চট্টগ্রাম কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে দলীয় রাজনীতি বন্ধ রাখতে সক্রিয় হবে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি শিক্ষার পরিবেশকে শুধু ধ্বংস করবে না, বরং কলেজের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতিকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, শহীদ ওয়াসিম কোনো দলের একক সম্পত্তি নয়। তার ত্যাগ চট্টগ্রাম কলেজের সকল শিক্ষার্থীর এবং সমগ্র জাতির। তাকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিবেন না। তার স্মৃতিতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নামকরণের দাবি আমরা শুরু থেকেই জানিয়ে আসছি। কিন্তু তাকে ব্যবহার করে কোনো দল বা গোষ্ঠী নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করলে তা শুধুমাত্র তার স্মৃতির অবমাননা নয়, বরং সাধারণ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং নিরাপত্তার প্রতি হুমকি।
চট্টগ্রাম কলেজ প্রশাসনের প্রতি আহবান চট্টগ্রাম কলেজকে ছাত্ররাজনীতি মুক্ত রাখার জন্য যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থান সেটি অব্যাহত রাখতে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। কলেজের পরিবেশ সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রশাসনের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এই দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি বা বিলম্ব ঘটলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার রক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, চট্টগ্রাম কলেজে কোনো ধরনের ছাত্ররাজনীতি পুনরায় প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকে আমরা কখনোই বরদাশত করবো না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি, দলীয় কার্যক্রম এবং শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংসকারী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ছিল, আছে এবং থাকবে।